আব্দুস সালাম, টেকনাফ;
সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে টেকনাফের একটি বসতবাড়িতে আটকে রাখা ভুক্তভোগীদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়ে মানবপাচারকারী চক্রের সক্রিয় চার সদস্যকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এসময় বন্দি অবস্থায় থাকা ৮ জন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) ভোররাতে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের পানছড়ি পাড়া এলাকার আব্দুল মোতালেবের বসতঘর থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন, আফাজ উদ্দিনের মেয়ে আসমা (১৯), আব্দুল মোতালেবের মেয়ে শাবনূর (২০), নুরুল হাজিমের স্ত্রী জহুরা (৪৩) ও মৃত আফাজ উদ্দিনের স্ত্রী সাহারা খাতুন (৬২)।
পলাতক, মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মোতালেব ওরফে কালা বদ্দা (৩০)।
টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ভোরে বিজিবির একটি দল পানছড়ি এলাকায় অভিযান চালায়। বিজিবি সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারী চক্রের কয়েকজন পালানোর চেষ্টা করলে চারজনকে আটক করা সম্ভব হয়। তাদের আটকে রাখা ৮ জন ভুক্তভোগী—যার মধ্যে ৬ জন নারী ও ২ জন শিশু—অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
ভুক্তভোগীদের জবানবন্দি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভুক্তভোগীরা জানান, মানবপাচারকারী চক্রের দোসররা তাদের উচ্চ বেতনের চাকরি, অল্প খরচে বিদেশ যাত্রা, দ্রুত ধনী হওয়ার প্রলোভনসহ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এভাবে প্রলোভনে ফেলে বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের সংগ্রহ করে পাচারকারীদের কাছে অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
আটক মানবপাচারকারীদের বক্তব্য, জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ি পথে বিজিবির সফল অভিযানের কারণে চক্রটি এখন লোকালয় ব্যবহার করে বিদেশমুখী যাত্রা নিয়ন্ত্রণ করছে। পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও পাওয়া গেছে বলে বিজিবি জানিয়েছে।
লে. কর্নেল আশিকুর রহমান পিএসসি আরও বলেন,
“টেকনাফ সীমান্তে মানবপাচারকারীদের জন্য এটি একটি কঠোর বার্তা। পাহাড় থেকে সমুদ্র পর্যন্ত কোথাও অপরাধীদের জন্য নিরাপদ জায়গা নেই। মানবতা বিরোধী এই অপরাধ দমনে বিজিবির সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
উদ্ধার হওয়া ৮ জনই বিভিন্ন এফডিএমএন ক্যাম্পের কার্ডধারী বাসিন্দা। প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে তাদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে আটক ও পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
